বাংলাদেশী মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যপ্রাচ্যে ইয়াবা ব্যবসায় ব্যাপক সাফল্য

বাংলাদেশী মাদক ব্যবসায়ী

নিউজ ডেস্ক: এলাকায় ফেন্সি উজ্জ্বল নামে পরিচিত বাংলাদেশী এ মাদক ব্যবসায়ী। ২০১০ সালে সন্ত্রাসের হাতিখড়ি ফেন্সি উজ্জ্বলের। তৎকালীন সময়ে শিল্পপতি হেলাল খানের ফুলদীর গ্রামের বাড়িতে আগুন দিয়ে সম্পুর্ণ বাড়ি পুড়িয়ে দেয় এই সন্ত্রাসী। থানায় অভিযোগ দিলে তৎকালীন এমপি মেহের আফরোজ চুমকির ইশারায় মামলা নেয়নি থানা পুলিশ। উল্টো জিম্মি করে হেলাল খানের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা এই সন্ত্রাসী। তৎকালীন গাজীপুরের এসপি মাহফুজুর রহমান নুরুজ্জামানের নেতৃত্বে হেলাল খানকে জিম্মি দশা থেকে উদ্ধার করা হয়। তারপর থেকে আর পিছ ফেরে তাকাতে হয়নি এই কুখ্যাত সন্ত্রাসীকে।

 

এলাকায় ফেনসিডিল সেবন ও ব্যবসা এবং ইয়াবা সেবন ও ব্যবসার অভয়ারণ্য করেছে এই কামরুজ্জামান উজ্জ্বল ওরফে সরওয়ার উদ্দিন উজ্জ্বল। খোঁজ নিয়ে জানা যায় ১৯৯১ সালে এসএসসিতে তৃতীয় বিভাগে পাস করা কামরুজ্জামান উজ্জ্বল কালীগঞ্জ কলেজে ভর্তির পর থেকে ফেনসিডিল সেবন ও ব্যবসার সাথে জড়িত। ২০১৬/১৭ সালের দিকে নিজের এন আই ডি পরিবর্তন করে নাম রাখেন সরওয়ার উদ্দিন। ২০১৯ সালে ইয়াবা ব্যবসা ও সেবনের দায়ে গাজীপুর গোয়েন্দা পুলিশ কর্তৃক হাতেনাতে ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয়ে কিছুদিন কারাভোগ করেন। যার কালীগঞ্জ থানার মামলা নম্বর ২৮ তারিখ: ২৮/১০/২০১৯ ইং । পরবর্তীতে জামিন নিয়ে বিদেশ পাড়ি জমান।

 

বর্তমানে মধ্য প্রাচ্যের সফল এক ইয়াবা ব্যবসায়ীর (বাংলাদেশী মাদক ব্যবসায়ী) নাম সরওয়ার উদ্দিন খান উজ্জ্বল। ইয়াবা ব্যবসা করে নিজ বাড়িতে করেছেন কোটি টাকা ব্যয়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি। মধ্য প্রাচ্যে সকল মাদক ব্যবসা তার নিয়ন্ত্রণে। স্থানীয়ভাবে ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে উজ্জ্বলের ছেলে হামজা খান, উজ্জ্বলের ডান হাত শাহ্ আলী রাব্বি, আরাফাত এবং তাদের তদারকির দায়িত্বে আছেন মাওলা আলী রাজীব (পিতা আজমল)। এই রাজীব এক সময় ছিঁচকে চোর হলেও কালিয়াকৈরের এক এএসপি এর মোটর সাইকেল চুরি করে বেশ কিছুদিন জেল খাটার পর এখন এলাকায় চোরা রাজীব হিসাবে সমধিক পরিচিত।

Rajib
ছবিতে চোরা রাজীব। সাবেক এমপি আখতারুজ্জামানের পাশে।

ইয়াবা ব্যবসা তদারকির দায়িত্বে থাকা রাজীব বক্তারপুর ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রী উম্মুল জাহান ফ্লোরার ছোট ভাই এবং কালীগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলামীন খানের ভাতিজা।

 

সম্প্রতি এবছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ডন উজ্জ্বল এলাকায় (ফুলদীর গ্রামে) অবস্থান করলেও কালীগঞ্জ থানা রহস্য জনক কারণে তাকে গ্রেফতার করেনি। ইয়াবা মামলায় (মামলা নম্বর ২৮ তারিখ ২৮/১০/২০১৯ ইং) পলাতক থাকার গ্রেফতারি পরোয়ানা কালীগঞ্জ থানায় থাকার বিষয়টি তৎকালীন ডিউটি অফিসার মো. কামাল স্বীকার করেছেন।

 

মামলার আসামী চালান কপি

 

দেশে অবস্থানকালীন ইয়াবা উজ্জ্বল কালীগঞ্জের বক্তারপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড মেম্বার সরোয়ার হোসেন এর বাড়িতে ৩/৩/২০২৪ তারিখ দুপুরের মধ্যাহ্ন ভোজ এ আমন্ত্রিত অতিথি ছিল। সারওয়ার মেম্বার অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট এর বিষয়টি জানতেন না বলে জানিয়েছেন। ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক তার (সারওয়ার মেম্বারের) চাচা শেখ গফুর ছিল।

 

এনআইডি জালিয়াতির বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জানেন না বলে জানিয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্র থেকে জানা যায় একই লোক দুইটি এনআইডি নিতে পারেন না। জালিয়াতি ও তথ্য গোপন করে নিয়ে থাকলে এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। একাজে যারা সহযোগিতা করবে তারাও অপরাধী।

 

কারুজ্জামাম খান উজ্জ্বল ওরফে সরোয়ার উদ্দিন খান উজ্জ্বল শুধু দুইটি এনআইডি করেননি তিনি ভিন্ন নামে দুইটি পাসপোর্ট করেছেন। ২০০০ সাল থেকে ২০১০ পর্যন্ত একটি পাসপোর্ট ব্যবহার করেছেন। বর্তমানে সরোয়ার উদ্দিন খান নামে আরেকটি পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন। উজ্জ্বল কালীগঞ্জের সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাকসুদুল হক খান মাসুদ এর মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দেয়ার মামলার জামিনপ্রাপ্ত আসামি। ওই মামলার অপর আসামি কুখ্যাত ডাকাত তাহের আলী কয়েক বছর আগে মারা গেছেন।

 

একাধিক বার কামরুজ্জামান খান উজ্জ্বল ওরফে সরওয়ার উদ্দিন (পিতা- আজাহার উদ্দিন খান ওরফে শাজদা মিয়া) এর দেশের মোবাইল নং +8801891**2007 এবং সৌদি আরবের মোবাইল নং +96654**56134 এ যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। লোকমুখে শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশী এ মাদক ব্যবসায়ী নাকি কয়েক শত কোটি টাকার মালিক। দুবাইতে রয়েছে কয়েকটি দামী ফ্ল্যাট এবং বিলাশ বহুল গাড়ি।

Related Post:
ধরাছোঁয়ার বাইরে গাজীপুরের শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী শামীম