ধর্ষণের শিকার সেই শিশুর শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন

শিশুর শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন

পাশবিক ধর্ষণের শিকার শিশুটির শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান শিশুটির শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক উল্লেখ করে বলেন, ‘এখনও শিশুটির জ্ঞান ফেরেনি। তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’ ধর্ষণের শিকার সেই শিশুর শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন ।

 

মাগুরায় আট বছরের এই শিশুটি গত বুধবার গভীর রাতে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়। শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেও তার অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। গত বৃহস্পতিবার রাতে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে গতকাল শুক্রবার রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়।

 

সরেজমিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, পেড্রিয়াটিক আইসিইউ’র বাইরে অবস্থান করছেন শিশুটির আত্মীয়রা। অনবরত কেঁদেই চলছেন শিশুটির মা, বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি। কখনও বসে বিলাপ করছেন, কখনও আবার চিৎকার করে জানতে চাইছেন, তার মেয়ে কেন কথা বলছে না?

 

শিশুটির ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত বোনের শ্বশুর হিটু শেখ (৪৭) ও বোনের স্বামী সজিব শেখকে (১৮) আটক করেছে পুলিশ। পরে বোনের ভাসুরকেও আটক করে পুলিশ।

 

‘শিশুটির শারীরিক অবস্থা খুবই ক্রিটিক্যাল’ উল্লেখ করে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘শিশুটিকে হত্যাচেষ্টার সময়ে গলায় যে ইঞ্জুরি হয়েছে, সেটার জন্য তার শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হচ্ছে। শরীরে জ্বর আছে এবং নিউমোনিয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। আপনারা সবাই তার জন্য দোয়া করুন।’

 

শিশুটির জন্য উন্নত চিকিৎসার জন্য চার সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে বলেও জানান পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান। তিনি জানান, শিশুটির উন্নত চিকিৎসার জন্য পেডিয়াট্রিক, সার্জারি, অ্যানেস্থেশিয়া ও গাইনি বিভাগের চার চিকিৎসককে নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।

 

শিশুটির চাচা বলেন, আমার ভাতিজি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে লেখাপড়া করতো। শনিবার নিজ বাড়ি শ্রীপুর থেকে সে বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকালে বড় বোনের শ্বশুর হিটু মিয়া তাকে একটি ঘরের মধ্যে নিয়ে ধর্ষণ করে। মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় মেয়েটিকে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর গুরুতর অবস্থায় ঢামেকে নেওয়া হয়।

 

স্বজনরা জানান, বিয়ের মাসখানেক পরে শিশুটির বড় বোনকেও পাশবিক নির্যাতনের চেষ্টা করেছিলেন তার শ্বশুর হিটু শেখ। কিন্তু মেয়ের বাবা দরিদ্র হওয়ায় বিষয়টি জানার পরও চুপ ছিলেন।